"> ১০ লাখে সোহাগ! – Nurunnaby Chowdhury

১০ লাখে সোহাগ!

যে কোন ধরনের সফলতা বা একটা পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার কাজটি বেশ কঠিন। খুব দ্রুত এটি হয় না। দীর্ঘ সময় ধরে লেগে থাকা, ক্রমাগত কাজ করে যাওয়া, কঠিন সময়েও লেগে থাকা এমন নানা বিষয় যুক্ত থাকে প্রতিটি সফলতার পেছনে। যিনি বা যারা এ বিষয়টি মেনে চলেন তিনি বা তারা এক সময়ে সফলতার শীর্ষে চলে আসেন। সফলতা খুব সহজে আসে না, দীর্ঘ সময় আর পরিশ্রমের ফসলই হচ্ছে সফলতা।

তো, এমন এক সফলতার দিন ছিল ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০। ২০১৪ সালের ৫ জুন যে তরুণের স্বপ্ন ছিল তথ্যপ্রযুক্তিকে সহজে অনেকের কাছে বাংলায় পৌঁছে দেওয়ার আজ তার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কারণ, আজ ১০ লাখের ভালোবাসায় যুক্ত হয়েছে সে। এ জন্য তার একটি ব্যানারও করেছে সে যেখানে লেখা ‘ওয়ান মিলিয়ন লাভ’

যার কথা বলছিলাম তার নাম সোহাগ। পুরো নাম মো. সোহাগ মিয়া। ভিডিও দেখার সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইট ইউটিউবে তাকে অবশ্য সবাই ‘দ্য টেক ডক্টর’ হিসেবেই চেনে। ‘সোহাগ ৩৬০’ নামের একটি চ্যানেলের উদ্যোক্তা সে এবং সে চ্যানেলটি ১০ লাখ সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ করার গৌরব অর্জন করেছে।

‘সোহাগ৩৬০’-র প্রতিষ্ঠাতা সোহাগ মিয়া

অনেকেই বলতে পারেন, এটা আর এ সময়ে এমন কি! বলাটা সহজ কিন্তু করে দেখানোটা কিন্তু সহজ নয়। সাধারণত ইউটিউবে বিনোদন ভিত্তিক নানা ভিডিও বা ভিডিও চ্যানেল খুব দ্রুতই জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় এবং সহজেই কয়েক লাখ সাবস্ক্রাইবার জোগাড় করে ফেলতে পারে। কিন্তু কোন একটি প্রযুক্তি বা অন্য কোন চ্যানেল সে কাজটি খুব সহজে বা কম সময়ে পারে না। এ জন্য প্রয়োজন হয় দীর্ঘ সময়ের আর পরিশ্রমের।

সোহাগের চ্যানেলের পুরো নাম ‘সোহাগ৩৬০ – দ্য টেক ডক্টর’। চ্যানেলটির অ্যাবাউট সেকশনে লেখা ‘এ ইউটিউব চ্যানেলটি বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক জনপ্রিয় একটি চ্যানেল।’ পরের লাইনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং সত্য। সেটি হচ্ছে ‘ বাংলায় ভালো তথ্যপ্রযুক্তি টিউটোরিয়াল, টিপস এবং ট্রিকস, গ্যাজেট রিভিউ পাওয়ার দারুন এক চ্যানেল এটি’।

মাঝে সোহাগ আরেকটি দারুণ কাজ শুরু করলো। অনেকেই টুকটাক নানা ধরনের প্রযুক্তিগত সমস্যায় পড়ে যায়। কিন্তু না বোঝার কারণে সেগুলোর সমাধান করতে পারেনা। সেই সহজ সমাধানগুলো নিয়ে সোহাগ শুরু করলো ‘বেসিক ভাই’। যে চ্যানেলে সহজে নানা ধরনের সমস্যার সহজ সমাধান পাওয়া যায়।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করি ২০০৬ সাল থেকে। তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষার্থী না আমি, তবে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে দারুণ আগ্রহ আমার। এখন ডিজিটাল মার্কেটিং প্রফেশনাল হিসেবে কাজ করছি। তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে আমি দেশের শীর্ষ দৈনিক দীর্ঘ সময় ধরেই লেখালেখি করেছি। এখনও করছি বিভিন্ন জায়গায়। এর পরেও কোন কিছু সহজে শিখতে চাইলে আমি নজর রাখি সোহাগের চ্যানেলে। যেমন: একবার মনে হলো ভিডিও এডিটিং শেখা দরকার। কয়েকটি সফটওয়্যারেই শিখতে চাই এমনই ইচ্ছে। দেরি না করে সোহাগের চ্যানেলে গিয়ে তার করা ভিডিও এডিটিং শেখার টিউটোরিয়াল দেখে শিখে ফেললাম!

এক মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ হয়েছে সোহাগ৩৬০ চ্যানেলে।

তখনও সোহাগের সঙ্গে আমার সরাসরি পরিচয় হয়নি। তবে তার চ্যানেলের ভক্ত হয়ে গেলাম। খবর নিতে গিয়েই একদিন আবিষ্কার করি, সোহাগ আমাদের ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়েরই একজন অ্যালামনাই এবং আমরা দুইজনেই একই বিভাগের এবং একই বিষয়ে স্নাতক শেষ করেছি!! এবার তো আমার বিস্ময়ের শেষ নেই। সেই থেকে ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং যা এখনও আছে।

নিজে তথ্যপ্রযুক্তির খুঁটিনাটির খবর রাখি বা কাজ করি বলে সোহাগের কাজগুলোর আমার খুব পছন্দ হয়। ও যে পরিশ্রম করে সেটি আমি বুঝতে পারি কারণ, আমিও কিছুটা এ ধরনের কাজ করি। বই নিয়ে আমার একটা কাজ আছে অভিনব। যেখানে মূলত বইয়ের সামারি, বই রিভিউ ইত্যাদি থাকে এবং আমি সেগুলো অ্যানিমেশন আকারে দেই। এ কাজটি করতে গিয়ে আমি আরো টের পেয়েছি সোহাগ কি পরিমান কষ্ট করে তার চ্যানেলের পেছনে।

বিভিন্ন জায়গায় আমি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কোর্স নেই। সেখানেও আমি ওর চ্যানেলের কথা বলি নানা কারনে। অনেকেই কিভাবে কাজ শিখবে, কি শিখবে এসব বিষয়ে জানতে চায়। তাদের বলি বিনামূল্যে সোহাগ যে পরিমান রিসোর্চ তার চ্যানেলে দিয়ে রেখেছে সেগুলো দেখলেই অনেক কিছু শেখা হয়ে যাবে।

অনেক কিছু লিখলাম। সোহাগের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ১০ লাখ মাইলফলক অর্জন হলো। এবার এ চাকা চলতে থাকবে। বাংলাদেশের এক তরুণের একটি তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক চ্যানেল ১০ লাখ ভালোবাসা পেয়েছে যা এক সময়ে রেকর্ড করবে বলে বিশ্বাস করি। জয়তু সোহাগ ৩৬০!

1 comment

  1. আমার খুব প্রিয় একটা মানুষ সোহাগ ভাই

Leave a Reply